বাচ্চা খেতে না চাইলে করনীয়

বাচ্চা খেতে না চাইলে করনীয়

বাচ্চা খেতে না চাইলে করনীয়

 

আপনার বাচ্চা কিছুই খেতে না চাইলে একজন শিশু বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া উচিত। একজন ডাক্তার

আপনার বাচ্চার স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে এর পেছনের কারণ নির্ণয় করতে পারবেন এবং সঠিক দিকনির্দেশনা দিতে পারবেন।

তবে, ডাক্তারের কাছে যাওয়ার আগে আপনি কিছু বিষয় চেষ্টা করতে পারেন:

খাবার পরিবেশনার ধরণ পরিবর্তন: খাবারকে আকর্ষণীয়ভাবে সাজিয়ে দিন। বিভিন্ন রঙ এবং আকারের

খাবার ব্যবহার করতে পারেন। কার্টুন বা মজার আকারের পাত্র ব্যবহার করতে পারেন।

 একসাথে খেতে বসা: পরিবারের সকলে একসাথে বসে খাবার খান। এতে বাচ্চা অন্যদের দেখে উৎসাহিত হতে পারে।

 ধৈর্য ধরুন: বাচ্চাকে জোর করে খাওয়ানোর চেষ্টা করবেন না। এতে খাবার সম্পর্কে তার নেতিবাচক ধারণা

তৈরি হতে পারে। ধৈর্য ধরে তাকে অল্প অল্প করে বিভিন্ন খাবার চেখে দেখতে উৎসাহিত করুন।

 খাবার তৈরিতে অংশগ্রহণ: বাচ্চাকে সাথে নিয়ে সহজ খাবার তৈরি করুন। এতে খাবারের প্রতি তার আগ্রহ বাড়তে পারে।

 

বাচ্চাদের জ্বর কমানোর ঘরোয়া উপায়

বাচ্চা কি কারণে ঘন ঘন বমি করে

বাচ্চাদের চোখে কেতুর হলে করণীয়

বাচ্চার সর্দি হলেই ঘরোয়া পদ্ধতিতে চিকিৎসা

 

 ছোট এবং ঘন ঘন খাবার: একসাথে অনেক খাবার না দিয়ে অল্প পরিমাণে খাবার কয়েকবার দিন।

পছন্দের খাবার: বাচ্চার পছন্দের কিছু স্বাস্থ্যকর খাবার তার খাদ্যতালিকায় রাখুন।

 নতুন খাবারের সাথে পরিচয়: ধীরে ধীরে নতুন খাবারের সাথে পরিচয় করান। প্রথমবারেই হয়তো সে খাবে না, তবে বারবার চেষ্টা করলে একসময় আগ্রহ জন্মাতে পারে।

 

বাচ্চা খেতে চায় না কি করনীয়

 

 স্ন্যাকসের সময় নিয়ন্ত্রণ: খাবারের সময়ের কাছাকাছি সময়ে অতিরিক্ত স্ন্যাকস দেওয়া থেকে বিরত থাকুন। এতে মূল খাবারের সময় খিদে নাও লাগতে পারে।

 টিভি বা মোবাইল এড়িয়ে চলুন: খাবার সময় টিভি বা মোবাইল ফোন দেখলে বাচ্চার মনোযোগ খাবারে থাকে না।

 পানি পান: নিশ্চিত করুন আপনার বাচ্চা পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করছে। অনেক সময় ডিহাইড্রেশনের কারণেও ক্ষুধা কমে যেতে পারে।

যদি এই চেষ্টাগুলোর পরেও আপনার বাচ্চার খাওয়ার অনীহা না কমে, তাহলে অবশ্যই একজন ডাক্তারের পরামর্শ নিন। কারণ এর পেছনে কোনো শারীরিক কারণও থাকতে পারে।

 

কি খেলে বাচ্চাদের রুচি বাড়ে

 

বাচ্চাদের রুচি বাড়াতে কিছু খাবার সাহায্য করতে পারে। তবে মনে রাখবেন, কোনো একটি বিশেষ খাবার রাতারাতি

রুচি বৃদ্ধি করতে পারে না। একটি সুষম এবং আকর্ষণীয় খাদ্যতালিকা তৈরি করা এবং খাওয়ানোর সঠিক পদ্ধতি অনুসরণ করা জরুরি।

 

কিছু খাবার যা বাচ্চাদের রুচি বাড়াতে সাহায্য করতে পারে

জিঙ্ক সমৃদ্ধ খাবার: জিঙ্কের অভাব হলে অনেক সময় বাচ্চাদের রুচি কমে যায়। কুমড়োর বীজ, বাদাম, ডিম, মাংস, এবং দুগ্ধজাত খাবারে জিঙ্ক পাওয়া যায়।

আয়রন সমৃদ্ধ খাবার: আয়রনের অভাবও ক্ষুধামান্দ্যের কারণ হতে পারে। লাল মাংস, ডিমের কুসুম, সবুজ শাকসবজি, এবং মটরশুঁটিতে প্রচুর পরিমাণে আয়রন থাকে।

ভিটামিন বি কমপ্লেক্স: এই ভিটামিনগুলো হজমক্ষমতা বাড়াতে এবং শরীরে শক্তি যোগাতে সাহায্য করে, যা রুচি বৃদ্ধিতে সহায়ক হতে পারে। শস্যদানা, ডিম, দুধ, এবং বিভিন্ন সবজিতে ভিটামিন বি কমপ্লেক্স পাওয়া যায়।

প্রোবায়োটিকস: অন্ত্রের স্বাস্থ্য ভালো রাখলে হজমক্ষমতা বাড়ে এবং রুচি উন্নত হতে পারে। দই এবং অন্যান্য খাবার প্রোবায়োটিকের ভালো উৎস।

আদা ও তুলসী: ঐতিহ্যগতভাবে আদা ও তুলসী হজমকারক এবং রুচিবর্ধক হিসেবে পরিচিত। অল্প পরিমাণে আদার রস বা তুলসীর রস মধু মিশিয়ে দেওয়া যেতে পারে (এক বছরের বেশি বয়সী বাচ্চাদের জন্য)।

 

বাচ্চা খেতে না চাইলে করনীয়

 

গাজর: গাজর ক্ষুধা বাড়াতে সাহায্য করতে পারে। খাবার গ্রহণের কিছুক্ষণ আগে গাজর কুচি বা গাজরের রস দেওয়া যেতে পারে।

লেবু: লেবুর রস হজমক্ষমতা বৃদ্ধি করে এবং রুচি বাড়াতে সাহায্য করে। তবে সরাসরি টক লাগলে বাচ্চা নাও খেতে চাইতে পারে, তাই অল্প পরিমাণে শরবতের সাথে মিশিয়ে দেওয়া যেতে পারে।

দই: দই শুধু প্রোবায়োটিকসের ভালো উৎস নয়, এটি হজমকেও উদ্দীপিত করে এবং রুচি বাড়াতে সাহায্য করতে পারে।

 

খাবার ছাড়াও কিছু বিষয় খেয়াল রাখা জরুরি:

খাবারকে আকর্ষণীয় করে তোলা: সুন্দরভাবে সাজিয়ে খাবার পরিবেশন করলে বাচ্চাদের আগ্রহ বাড়ে।

ছোট এবং ঘন ঘন খাবার: একসাথে বেশি খাবার না দিয়ে অল্প পরিমাণে খাবার কয়েকবার দিন।

খাবার তৈরিতে অংশগ্রহণ: বাচ্চাদের সাথে নিয়ে সহজ খাবার তৈরি করলে তাদের খাবারের প্রতি আগ্রহ জন্মাতে পারে।

নিয়মিত খাবারের সময়: একটি নির্দিষ্ট সময়ে খাবার দেওয়ার অভ্যাস তৈরি করুন।

খাবার সময় টিভি বা মোবাইল এড়িয়ে চলুন: এতে বাচ্চার মনোযোগ খাবারের দিকে থাকবে।

 ধৈর্য ধরুন: নতুন খাবারের সাথে পরিচিত হতে বাচ্চার সময় লাগতে পারে। জোর না করে ধৈর্য ধরে চেষ্টা চালিয়ে যান।

যদি আপনার বাচ্চার রুচির অভাব দীর্ঘস্থায়ী হয় এবং ওজন কমে যাওয়া বা অন্য কোনো স্বাস্থ্য সমস্যা দেখা দেয়,

তাহলে অবশ্যই একজন শিশু বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন। ডাক্তার প্রয়োজন মনে করলে কিছু ভিটামিন বা মিনারেল সাপ্লিমেন্ট এর পরামর্শও দিতে পারেন।

 

বাচ্চারা কখন খেতে চায় না

বাচ্চারা বিভিন্ন কারণে খেতে না চাইতে পারে এবং এর পেছনে শারীরিক ও মানসিক উভয় ধরনের কারণ থাকতে পারে। এখানে কিছু সাধারণ কারণ উল্লেখ করা হলো যখন বাচ্চারা সাধারণত খেতে চায় না:

শারীরিক কারণ:

অসুস্থতা: জ্বর, সর্দি, কাশি, পেট খারাপ বা অন্য কোনো সংক্রমণ হলে বাচ্চাদের ক্ষুধা কমে যেতে পারে। দাঁত তোলার সময়ও অনেক বাচ্চা খেতে অনীহা দেখায়।

পেট ভরা থাকা: খাবারের সময়ের কাছাকাছি সময়ে যদি তারা দুধ, জুস বা অন্য কোনো স্ন্যাকস বেশি পরিমাণে খায়, তাহলে মূল খাবারের সময় তাদের ক্ষুধা লাগবে না।

কোষ্ঠকাঠিন্য: পেটে অস্বস্তি বা কোষ্ঠকাঠিন্য থাকলে বাচ্চারা খেতে চায় না।

অ্যালার্জি বা অসহিষ্ণুতা: কোনো বিশেষ খাবারের প্রতি অ্যালার্জি বা অসহিষ্ণুতা থাকলে বাচ্চারা সেই খাবারটি বা সাধারণভাবে খেতে অনীহা দেখাতে পারে।

ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া: কিছু ওষুধের কারণেও ক্ষুধা কমে যেতে পারে।

মানসিক ও আচরণগত কারণ:

খাবার অপছন্দ: কিছু বাচ্চার নির্দিষ্ট কিছু খাবারের স্বাদ, গন্ধ বা গঠন অপছন্দ হতে পারে।

 

baccha khete na chaile koronio

 

মনোযোগের অভাব: টিভি দেখা, মোবাইল বা ট্যাবলেটে গেম খেলার সময় তাদের খাবারের প্রতি মনোযোগ থাকে না।

খাবার নিয়ে চাপ: বাবা-মা বা পরিবারের অন্য সদস্যরা যদি বাচ্চাকে জোর করে খাওয়ানোর চেষ্টা করে, তাহলে তাদের মধ্যে খাবারের প্রতি অনীহা তৈরি হতে পারে।

নতুন পরিবেশ বা রুটিনের পরিবর্তন: নতুন জায়গায় গেলে বা দৈনন্দিন রুটিনে কোনো পরিবর্তন এলে বাচ্চারা সাময়িকভাবে খেতে অনীহা দেখাতে পারে।

 পাওয়ার স্ট্রাগল: কিছু বাচ্চা তাদের ইচ্ছাশক্তি দেখাতে বা বাবা-মায়ের মনোযোগ আকর্ষণ করার জন্য খেতে না চাইতে পারে।

মানসিক চাপ বা উদ্বেগ: পারিবারিক কলহ বা অন্য কোনো কারণে মানসিক চাপে থাকলে বাচ্চাদের ক্ষুধা কমে যেতে পারে।

খাবারের প্রতি আগ্রহের অভাব: খাবার যদি আকর্ষণীয় না হয় বা একই ধরনের খাবার বারবার দেওয়া হয়,

তাহলে তাদের খাওয়ার আগ্রহ কমে যেতে পারে।

বয়স-ভিত্তিক কারণ:

 শৈশবে বৃদ্ধি ধীর হওয়া: প্রথম বছরের তুলনায় পরের বছরগুলোতে বাচ্চাদের বৃদ্ধির হার কিছুটা কমে আসে,

তাই তাদের তুলনামূলকভাবে কম ক্ষুধা লাগতে পারে।

 খাবার সম্পর্কে খুঁতখুঁতে ভাব: টডলার বা প্রিস্কুল বয়সে (২-৫ বছর) অনেক বাচ্চা খাবারের ব্যাপারে খুব খুঁতখুঁতে

হয়ে ওঠে। তারা নির্দিষ্ট কিছু খাবার পছন্দ করে এবং নতুন খাবার গ্রহণ করতে দ্বিধা বোধ করে।

যদি আপনার বাচ্চা প্রায়ই খেতে না চায় এবং এর কারণে তার স্বাস্থ্য বা বিকাশে কোনো প্রভাব পড়ে বলে মনে হয়,

তাহলে অবশ্যই একজন শিশু বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া উচিত। ডাক্তার এর পেছনের সঠিক কারণ নির্ণয় করে উপযুক্ত পরামর্শ দিতে পারবেন।

Follow My Facebook

Check Also

শান্ডা খাওয়ার উপকারিতা এবং শান্ডা খাওয়া হালাল নাকি হারাম

শান্ডা খাওয়ার উপকারিতা এবং শান্ডা খাওয়া হালাল নাকি হারাম

শান্ডা খাওয়ার উপকারিতা এবং শান্ডা খাওয়া হালাল নাকি হারাম মরুভূমির শান্ডা খেলে কি উপকার হয় …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *