বাচ্চাদের জ্বর কমানোর ঘরোয়া উপায়
বাচ্চাদের জ্বর হলে বাবা-মায়েরা স্বাভাবিকভাবেই চিন্তিত হয়ে পড়েন।
তবে অনেক ক্ষেত্রেই ঘরোয়া কিছু সহজ উপায় অবলম্বন করে বাচ্চাদের জ্বর কমানো সম্ভব।
মনে রাখা দরকার, জ্বর কোনো রোগ নয়, এটি রোগের লক্ষণ। তাই জ্বরের কারণ নির্ণয় করা এবং প্রয়োজনে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।
তবে প্রাথমিক অবস্থায় কিছু ঘরোয়া পদ্ধতি অবলম্বন করে শিশুকে আরাম দেওয়া যেতে পারে।
১ মাসের শিশুর সর্দি হলে করণীয়
বাচ্চাদের চোখে কেতুর হলে করণীয় কি
১. পর্যাপ্ত বিশ্রাম: জ্বরের সময় শিশুর শরীর দুর্বল থাকে। তাই তাকে পর্যাপ্ত বিশ্রাম দেওয়া প্রয়োজন।
শিশুকে শান্ত পরিবেশে শুতে দিন এবং বেশি দৌড়াদৌড়ি বা খেলাধুলা করতে দেবেন না।
ঘুমের সময় শরীর তার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার মাধ্যমে জীবাণুর বিরুদ্ধে লড়াই করতে পারে।
বাচ্চাদের জ্বর কমানোর ঘরোয়া উপায়
২. প্রচুর পরিমাণে তরল খাবার: জ্বরের সময় শিশুর শরীর থেকে জল বেরিয়ে যায়, যা ডিহাইড্রেশন ঘটাতে পারে।
তাই শিশুকে বারবার জল, ফলের রস, পাতলা স্যুপ, বা ইলেকট্রোলাইট দ্রবণ (ORS) পান করতে দিন।
এটি শরীরের জলের ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করবে এবং শরীরকে ঠান্ডা রাখবে।
৩. হালকা পোশাক পরিধান: শিশুকে হালকা ও আরামদায়ক পোশাক পরান।
অতিরিক্ত জামাকাপড় পরালে শরীরের তাপ বের হতে বাধা পায় এবং জ্বর আরও বাড়তে পারে। সুতির পোশাক এক্ষেত্রে সবথেকে ভালো।
বাচ্চাদের জ্বর কমানোর ঘরোয়া উপায়
৪. ভেজা তোয়ালে বা কাপড়: একটি নরম তোয়ালে বা কাপড় হালকা গরম জলে ভিজিয়ে শিশুর কপালে,
বগলে এবং কুঁচকিতে রাখুন। কিছুক্ষণ পর পর এটি পরিবর্তন করুন।
এটি শরীরের তাপমাত্রা কমাতে সাহায্য করে।
তবে খেয়াল রাখবেন জল যেন খুব ঠান্ডা না হয়, কারণ ঠান্ডা জল ব্যবহার করলে শিশুর শরীর কাঁপতে পারে।
বাচ্চাদের জ্বর কমানোর ঘরোয়া উপায়
৫. উষ্ণ জলের স্নান: শিশুকে হালকা উষ্ণ জলে স্নান করাতে পারেন।
এটি তার শরীরকে আরাম দেবে এবং তাপমাত্রা কমাতে সাহায্য করবে।
তবে জল যেন খুব গরম বা খুব ঠান্ডা না হয় সেদিকে খেয়াল রাখুন। স্নানের পর শিশুকে ভালোভাবে মুছে দিন এবং হালকা পোশাক পরান।
৬. ঘর ঠান্ডা রাখা: যে ঘরে শিশু রয়েছে সেই ঘরটি ঠান্ডা ও বাতাস চলাচলকারী রাখুন।
ফ্যান ব্যবহার করতে পারেন তবে সরাসরি শিশুর গায়ে হাওয়া লাগানো উচিত নয়।
বাচ্চাদের জ্বর হলে কি খাওয়া উচিত
৭. সঠিক খাবার: জ্বরের সময় শিশুর হজমক্ষমতা কমে যেতে পারে।
তাই তাকে সহজে হজমযোগ্য হালকা খাবার দিন।
খিচুড়ি, সুজি, নরম ভাতের মতো খাবার এক্ষেত্রে উপযুক্ত। জোর করে খাওয়ানোর চেষ্টা করবেন না।
৮. পর্যবেক্ষণ: নিয়মিত শিশুর শরীরের তাপমাত্রা পর্যবেক্ষণ করুন। যদি জ্বর খুব বেশি হয় (১০২ ডিগ্রি ফারেনহাইটের বেশি)
বা দীর্ঘ সময় ধরে থাকে, অথবা অন্য কোনো উপসর্গ দেখা যায় (যেমন – শ্বাসকষ্ট, খিঁচুনি, অতিরিক্ত দুর্বলতা), তাহলে দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নিন।
মনে রাখবেন:
* নবজাতক বা খুব ছোট শিশুদের জ্বর হলে কোনো রকম ঘরোয়া পদ্ধতি অবলম্বন করার আগে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিন।
* আ্যসপিরিন জাতীয় ওষুধ শিশুদের দেবেন না, কারণ এটি রে’স সিনড্রোম নামক একটি মারাত্মক রোগের কারণ হতে পারে।
*জ্বর কমানোর জন্য অ্যালকোহল ব্যবহার করা উচিত নয়।
এই ঘরোয়া উপায়গুলি বাচ্চাদের জ্বরের প্রাথমিক পর্যায়ে কিছুটা আরাম দিতে পারে।
তবে যদি জ্বর না কমে বা অন্য কোনো জটিলতা দেখা দেয়, তাহলে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত।