মাথা ব্যথা কমানোর ১০টি উপায়
মাথা ব্যথা একটি সাধারণ সমস্যা যা আমাদের দৈনন্দিন জীবনকে ব্যাহত করতে পারে।
বিভিন্ন কারণে এই ব্যথা হতে পারে, তবে কিছু সহজ উপায় অবলম্বন করে আমরা এর উপশম পেতে পারি।
নিচে মাথা ব্যথা কমানোর ১০টি উপায় নিয়ে আলোচনা করা হলো:
মাথা ব্যথা কমানোর ১০টি উপায়
১. পর্যাপ্ত ঘুম: প্রতিদিন ৭-৮ ঘণ্টা ঘুমানো শরীর ও মনকে সতেজ রাখে এবং মাথা ব্যথার প্রবণতা কমায়।
অতিরিক্ত মাথা ব্যথার কারণ কি
ঘুমের অভাব মাথা ব্যথার একটি অন্যতম কারণ।
২. পর্যাপ্ত জল পান: ডিহাইড্রেশন বা শরীরে জলের অভাবের কারণে মাথা ব্যথা হতে পারে।
তাই সারাদিনে পর্যাপ্ত পরিমাণে জল পান করা জরুরি।
৩. আরামদায়ক পরিবেশে বিশ্রাম: মাথা ব্যথা করলে উজ্জ্বল আলো ও কোলাহলপূর্ণ পরিবেশ এড়িয়ে শান্ত ও অন্ধকারাচ্ছন্ন ঘরে বিশ্রাম নেওয়া উচিত।
মাথা ব্যথা কমানোর ১০টি উপায়
৪. ঠান্ডা বা গরম সেঁক: কপালে বা ঘাড়ে ঠান্ডা বা গরম জলের ব্যাগ অথবা কাপড় দিয়ে সেঁক দিলে আরাম পাওয়া যায়।
কোনটি আপনার জন্য বেশি কার্যকর, তা পরীক্ষা করে দেখুন।
৫. ক্যাফেইন গ্রহণ: অল্প পরিমাণে চা বা কফি পান করলে কিছু ক্ষেত্রে মাথা ব্যথা কমতে পারে।
তবে অতিরিক্ত ক্যাফেইন গ্রহণ করা উচিত নয়, কারণ এটি আবার মাথা ব্যথার কারণ হতে পারে।
১ মাসের শিশুর সর্দি হলে করণীয়
বাচ্চাদের জ্বর কমানোর ঘরোয়া পদ্ধতি
বাচ্চাদের চোখে কেতুর হলে করণীয় কি
ঘাড় ও মাথা ব্যথার কারণ ও প্রতিকার
৬. ম্যাসেজ: হালকা হাতে কপাল, ঘাড় ও কাঁধের পেশি ম্যাসাজ করলে রক্ত চলাচল বাড়ে এবং মাথা ব্যথা কমে।
৭. যোগা ও মেডিটেশন: নিয়মিত যোগা ও মেডিটেশন করলে মানসিক চাপ কমে এবং এর ফলে সৃষ্ট মাথা ব্যথা থেকেও মুক্তি পাওয়া যায়।
মাথা ব্যথার কারণ ও প্রতিকার
৮. ব্যথানাশক ঔষধ: তীব্র মাথা ব্যথায় ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী প্যারাসিটামল বা আইবুপ্রোফেন-
এর মতো ব্যথানাশক ঔষধ গ্রহণ করা যেতে পারে। তবে ঘন ঘন ঔষধ খাওয়া উচিত নয়।
ঘন ঘন মাথা ব্যথার কারণ কি
৯. স্ক্রিন টাইম কমানো: দীর্ঘক্ষণ মোবাইল বা কম্পিউটারের স্ক্রিনে তাকিয়ে থাকলে চোখের
উপর চাপ পড়ে এবং মাথা ব্যথা হতে পারে। তাই কাজের ফাঁকে বিশ্রাম নেওয়া জরুরি।
১০. স্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহণ: নিয়মিত ও স্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহণ করা শরীরকে সুস্থ রাখে এবং মাথা ব্যথার ঝুঁকি কমায়।
প্রক্রিয়াজাত খাবার ও ফাস্ট ফুড এড়িয়ে চলুন।
এই উপায়গুলো অবলম্বন করে অনেকেই মাথা ব্যথা থেকে মুক্তি পেতে পারেন।
তবে যদি আপনার মাথা ব্যথা ঘন ঘন হয় বা তীব্র হয়, তবে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
অতিরিক্ত মাথা ব্যথার কারণ
অতিরিক্ত মাথা ব্যথার অনেক কারণ থাকতে পারে। কিছু সাধারণ কারণ নিচে উল্লেখ করা হলো:
প্রাথমিক মাথা ব্যথা (Primary Headaches): এ ধরনের মাথা ব্যথা অন্য কোনো স্বাস্থ্য সমস্যার কারণে হয় না।
বরং মাথার নিজস্ব কাঠামোর (যেমন রক্তনালী, স্নায়ু, পেশী) সমস্যার জন্য হয়ে থাকে।
অতিরিক্ত মানসিক চাপ কি মাথা ব্যাথার কারণ
টেনশন হেডেক (Tension Headache): এটি সবচেয়ে সাধারণ ধরনের মাথা ব্যথা।
মানসিক চাপ, দুশ্চিন্তা, ঘুমের অভাব, ভুল অঙ্গবিন্যাস বা দীর্ঘক্ষণ ধরে একই অবস্থানে থাকার কারণে এটি হতে পারে।
মনে হয় যেন মাথার চারপাশে একটি চাপ সৃষ্টি হয়েছে।
অতিরিক্ত মাথাব্যথার কারণ কী কী
মাইগ্রেন (Migraine): এটি তীব্র ধরনের মাথা ব্যথা যা সাধারণত মাথার একপাশে হয় এবং ধড়ফড়ানি অনুভব হতে পারে।
এর সাথে বমি বমি ভাব, বমি, আলো ও শব্দের প্রতি সংবেদনশীলতা থাকতে পারে।
হরমোনের পরিবর্তন, কিছু খাবার ও পানীয়, মানসিক চাপ, ঘুমের পরিবর্তন ইত্যাদি মাইগ্রেন ট্রিগার করতে পারে।
ক্লাস্টার হেডেক (Cluster Headache): এটি খুবই তীব্র ধরনের মাথা ব্যথা যা চোখের চারপাশে
বা মাথার একপাশে গুচ্ছাকারে কয়েক সপ্তাহ বা মাস ধরে হতে পারে। এর সাথে চোখ লাল হওয়া,
চোখ থেকে জল পড়া, নাক বন্ধ বা নাক দিয়ে জল পড়া ইত্যাদি লক্ষণ থাকতে পারে।
সেকেন্ডারি মাথা ব্যথা (Secondary Headaches): এ ধরনের মাথা ব্যথা অন্য কোনো স্বাস্থ্য সমস্যার লক্ষণ হিসেবে দেখা দেয়।
সাইনাস সংক্রমণ (Sinus Infection): সাইনাসের প্রদাহের কারণে কপালে, গালে এবং চোখের চারপাশে ব্যথা হতে পারে।
ঘাড় ও মাথা ব্যথার কারণ ও প্রতিকার
ডিহাইড্রেশন (Dehydration): শরীরে জলের অভাবের কারণে মাথা ব্যথা হতে পারে।
ক্যাফেইন withdrawal (Caffeine Withdrawal): নিয়মিত কফি বা চা পান করার পর হঠাৎ করে তা বন্ধ করলে মাথা ব্যথা হতে পারে।
চোখের সমস্যা (Eye Strain): দীর্ঘক্ষণ ধরে স্ক্রিনে তাকিয়ে থাকা বা চোখের অন্যান্য সমস্যার কারণে মাথা ব্যথা হতে পারে।
দাঁতের সমস্যা (Dental Problems): দাঁতের সংক্রমণ বা চোয়ালের সমস্যার কারণে মাথা ব্যথা হতে পারে।
মাথা ব্যথা কমানোর ১০টি উপায়
উচ্চ রক্তচাপ (High Blood Pressure): অনিয়ন্ত্রিত উচ্চ রক্তচাপের কারণে তীব্র মাথা ব্যথা হতে পারে।
মস্তিষ্কের সংক্রমণ (Brain Infection): মেনিনজাইটিস বা এনসেফালাইটিসের মতো মস্তিষ্কের সংক্রমণ মারাত্মক মাথা ব্যথার কারণ হতে পারে।
এর সাথে জ্বর, ঘাড় শক্ত হয়ে যাওয়া, বমি, আলোর প্রতি সংবেদনশীলতা ইত্যাদি লক্ষণ থাকতে পারে।
মাথার আঘাত (Head Injury): মাথায় আঘাত লাগলে মাথা ব্যথা হতে পারে, যা কয়েক দিন বা সপ্তাহ পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে।
টিউমার (Tumor): মস্তিষ্কে টিউমার হলে ক্রমাগত এবং ক্রমশ তীব্র হতে থাকা মাথা ব্যথা
হতে পারে। এর সাথে অন্যান্য স্নায়বিক লক্ষণও থাকতে পারে।
ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া (Medication Side Effects): কিছু ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হিসেবে মাথা ব্যথা হতে পারে।
ফ্লু বা ঠান্ডা লাগা (Flu or Common Cold): সাধারণ ঠান্ডা লাগা বা ফ্লু-এর কারণেও মাথা ব্যথা হতে পারে।
যদি আপনার ঘন ঘন বা তীব্র মাথা ব্যথা হয়, অথবা যদি এর সাথে অন্যান্য অস্বাভাবিক লক্ষণ থাকে,
তবে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত। কারণ এটি কোনো গুরুতর স্বাস্থ্য সমস্যার লক্ষণ হতে পারে।